মনের ভাব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ভাষা যা মানুষ মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে। সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলা একটি অসাধারণ স্কিল। গুছিয়ে কথা বলতে পারা লোকজন সমাজে অনেক বেশি প্রাধান্য পায় । দুইজন ব্যক্তি আপনাকে একই কথা বলল একজন খুবই গুছিয়ে আসতে ধীরে স্বাভাবিকভাবে একটু ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে সময় নিয়ে কথাটি বলল আরেকজন খুবই দ্রুত তাড়াহুড়া করে কথাটি বলল , পরিশেষে আপনি বুঝতে পারবেন যে যিনি ভালো করে গুছিয়ে কথা বলেছেন তার কথাটা আপনার উপর বেশি প্রভাব ফেলেছে এবং যিনি খুবই তাড়াহুড়া করে কথাটি বলেছে তার কথাটি আপনার মাথায় বেশি কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে যা আপনাকে প্রভাবিত করতে পারেনি ।
অনেকের মনে হতে পারে সুন্দর করে বা গুছিয়ে কথা বলা এমন কি হতে পারে কিন্তু আপনি শিক্ষক হন ছাত্র হোন আইনজীবী হোন ব্যবসায়ী হন ড্রাইভার হন যে কোন পেশাদারিত্বেই যুক্ত থাকুন না কেন সকল ক্ষেত্রে সুন্দর করে কথা বলা আপনাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে । সুন্দর করে কথা বলতে পারলে আপনি অন্য সকল ব্যক্তির তুলনায় নিজেকে বেশি স্মার্ট এবং আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে পারবেন।
সুন্দর করে কথা বলার উপায় ও কৌশল
আত্মবিশ্বাস
যখন কারো সাথে কথা বলবেন তখন কোনভাবেই নার্ভাস হওয়া যাবে না। কথা বলার আত্মবিশ্বাস বুঝতে হলে আপনি সেই সকল মানুষকে দেখুন যারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে কথা বলে উদাহরণ হিসাবে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে দেখুন । তিনি অসাধারণ সহজ সাবলীল ভাবে কথা বলে । যখন কেউ কোন বিপদের সম্মুখীন হয় তখন তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস কমে গিয়ে হতাশা কাজ করতে থাকে তখন দেখা যায় সে কি করবে বা কি বলবে তা বুঝতে পারেনা আবার যখন আপনি কোন কিছুতে সফলতা লাভ করেন সেটা হতে পারে পরীক্ষা ভালো রেজাল্ট করা অথবা ভালো চাকরি পেয়েছেন তখন আপনার কথা বলার ভাব ভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে যায় কারণ তখন আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাস কাজ করে এবং সবাই আপনার কথার প্রাধান্য দেয়। আত্মবিশ্বাস আসে মানুষের তিনটি জিনিস থেকে ১. অভিজ্ঞতা ২. জ্ঞান ৩. অর্থ । তাই আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হলে এই তিনটি বিষয়ের উপর কাজ করা শুরু করুন ।
ধীর গতিতে সময় নিয়ে কথা বলা
আমরা যখন কথা বলি তখন আমাদের অভিজ্ঞতা স্মৃতি এবং জ্ঞান দ্বারা মস্তিষ্ক একটি ধারণা তৈরি করে যা আমরা মুখ দিয়ে প্রকাশ করি । কথা বলার সময় তাড়াহুড়া করা যাবে না মনে রাখবেন আপনি যা ভাবছেন ঠিক যেন তাই বলতে পারেন অনেক সময় দেখা যায় মানুষ একটা চিন্তাভাবনা করে আর মুখ দিয়ে আরেকটা বলে এটি করলে আমি স্পষ্টভাষী হতে পারবেন না।
বই পড়া
বই হচ্ছে অভিজ্ঞতার প্রকাশ । বই পড়া মানুষের জ্ঞানকে বৃদ্ধি করে । কথা বলার সময় বই পড়ার অভিজ্ঞতা দিয়ে চমকপ্রদ ভাবে মনের ভাব প্রকাশ করা যায়। সুন্দর করে কথা বলার সক্ষমতা আসে একটি সুন্দর ধারণা তৈরি করার মাধ্যমে । বই হচ্ছে যুক্তির ভান্ডার যা আপনার ধারণার সক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলবে তাই স্পষ্টভাষী হতে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই আবার বই পড়া বলতে সোশ্যাল মিডিয়া বা ওয়েবসাইট আর্টিকেল পড়া বোঝায় না এটি অবশ্যই হতে হবে ফিজিক্যাল বই । এখন প্রশ্ন করতে পারেন আমি কি ধরনের বই পড়বো ? আপনার যে ধরনের বই পড়তে ভালো লাগে সেটিই পড়তে পারেন ,আপনি যেকোনো ধরনের বই পড়তে পারেন হোক সেটি গল্পের বই , ইতিহাস, উপন্যাস, রাজনৈতিক , জীবনী , ফ্যান্টাসি , হরর, ড্রামা বা কমিকসের বই ইত্যাদি।
সঠিক উচ্চারণ
লক্ষ রাখতে হবে আপনি কথা বলার সময় কোন সর ব্যবহার করেন । কথা বলার সময় সর্বদা নিজস্ব সর ব্যবহার করবেন যদি অন্য কোন ব্যক্তির স্টাইলে কথা বলার চেষ্টা করেন তাহলে সেটি উল্টো আপনার ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করবে। যেহেতু আমরা বাংলায় কথা বলি তাই এটি উন্নতি করতে আহামরি তেমন কোন কষ্ট করতে হবে না শুধুমাত্র মুখের জড়তা দূর করতে হবে। মুখের জড়তা দূর করার জন্য কথা বলার সময় সব সময় আপনার কাছে যে বাক্যটি বা শব্দটি সহজ মনে হয় সেটি ব্যবহার করুন। শব্দটি খুব জটিল করবেন না বা কোন জটিল শব্দ আপনার বাক্যে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন না । অনেকে খুব বেশি স্মার্টলি কথা বলতে গিয়ে জটিল শব্দ ব্যবহার করে এলোমেলোভাবে কথা বলে ফেলে।
আই কন্টাক্ট
কারো সাথে কথা বলতে তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন এতে আপনার আত্মবিশ্বাসের বৃদ্ধি পাবে এবং যে আপনার কথা শুনতেছে সে গুরুত্ব সহকারে কথাটি অনুধাবন করতে পারবে। কোন স্টেজে কথা বললে শরীরের অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখুন এবং মাঝে মাঝে বিভিন্ন শ্রোতাদের চোখের দিকে তাকান ।
পরিকল্পনা
কথা বলা বা ভাষণ দেওয়ার আগে পরিকল্পনা করে নেওয়া জরুরি কারণ অনেকেই ভাষণ দেওয়ার সময় কোন বিষয় দিয়ে শুরু করবে এবং কোন বিষয় দিয়ে শেষ করবে তা ভুলে যায়। আমার এক টপিক থেকে অন্য টপিকে চলে যায় । কোন অনুষ্ঠানে বা অফিস আদালতে ভাষণ দিতে হলে সেটি নিয়ে আগেই পরিকল্পনা করে নেওয়া উচিত এতে করে শ্রোতারা ভাষণটি সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারবে
Leave a Reply