সবুজ সমারোহে বাংলাদেশ শখ কিংবা সবুজের প্রতি ভালোবাসায় গড়ে তুলতে পারেন আপনার শখের বাগান । বর্তমান সময়ে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাড়ার সাথে সাথে শাক সবজিরও বাড়তি দাম দেখা যায় তাই বাড়ির খোলা জায়গায় একটি বাগান তৈরি করা একটি আকর্ষণীয় পদক্ষেপ । সাধারণত একটি বাগান তৈরি করার মন-মানসিকতা থেকেই এর অনুপ্রেরণা হতে পারে । সবজি বাগান তৈরি করে যেমন একটি বাড়ির সৌন্দর্য তেমনি এর থেকে আপনি নিজে সবজি উৎপাদন করে লাভবান হতে পারবেন এতে কোন সন্দেহ নেই। অবসর সময় অথবা কাজের ফাঁকে একটি বাগান প্রস্তুত করা তেমন কোন কঠিন কাজ নয় তাই আপনার অবসর সময়ে এই শখের কাজটি করতে পারেন এতে শরীর ও মন দুটো ভালো থাকবে । নিজের তৈরি করা বাগান যেমন সৌন্দর্যের প্রতীক তেমনি এর থেকে স্বাস্থ্যসম্মত ফলন পাওয়া যায়।
কিভাবে শুরু করব?
প্রথমে একটি জায়গা নির্বাচন করুন যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো এবং রোদ থাকে । এটি হতে পারে আপনার উঠান ,ব্যালকনি, বারান্দা বা বাড়ির ছাদ । বাগান তৈরির প্রথম উপকরণ হচ্ছে আপনি কি রোপন করতে চাচ্ছেন সেটি নির্বাচন করুন । মনে রাখবেন আপনার নির্বাচনকৃত জায়গাটিতে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাসের উপস্থিতি থাকে ।
সবজি নির্বাচন
পৃথিবীতে প্রায় হাজার রকমের সবজি পাওয়া যায় সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে আপনি কি রোপন করতে চাচ্ছেন সেটি দিয়ে শুরু করুন কারণ আপনি যা রোপন করতে চাচ্ছেন সেটিতে আগ্রহ না থাকলে আপনি এর প্রতি অযত্নশীল হয়ে উঠবেন। একেক প্রকার শাক সবজি একেক রকম ভাবে চাষ করতে হয় । যেহেতু বাগানটি ছোট পরিসরে তৈরি হবে তাই এর থেকে ভালো ফলন উৎপাদন করা সম্ভব। যদি আপনার বাগান তৈরি করা সম্পর্কে পুর্বে কোন ধারণা না থাকে তাহলে আপনি এমন একটি সবজি নির্বাচন করুন যা ছোট পরিসরে উৎপাদন করা যায় অথবা বারমাসি শাক সবজি নিয়ে শুরু করতে পারেন এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আলু , মরিচ, মিষ্টিকুমড়া, পুঁইশাক , ডাটা শাক , লাল শাক, ধনে পাতা, গাজর , পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি।
রোপন পদ্ধতি
আপনার নির্বাচনকৃত সবজির বাম্পার ফলনের জন্য এর উন্নত মানের রোগ মুক্ত বীজ বা চারা সংগ্রহ করতে হবে। নার্সারি বা বাজার থেকে বীজ বা চারা কিনে আনতে পারেন। যেহেতু বাগানটি বাড়ির ভেতরে অবস্থান করবে তাই গাছের আকার অনুযায়ী টব সংগ্রহ করুন । সবজির জাত অনুসারে মাটি সংগ্রহ করতে হবে । টবে জৈব সার সমৃদ্ধ মাটি যোগ করতে হবে। এমন জায়গায় টবটি স্থাপন করতে হবে যেখানে রাখলে টবটি ঝড় বাতাসে পরে বা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না । যদি চারার সংখ্যা বেশি থাকে তবে টবগুলোকে এমন জায়গায় রাখুন যেন এর পাশ দিয়ে চলাচল করার মতো ফাঁকা জায়গা থাকে।
বাগান ব্যয়
আমারা যেহেতু বাগানটি বাড়ির ভেতরে তৈরি করব তাই এটি ছোট পরিসরে গড়ে উঠবে তাই এতে আহামরি বেশি খরচ করা যাবে না। বাজার থেকে ফুলের টব, বীজ ও কম্পোস্ট সার যুক্ত মাটি কিনতে হবে এতে ২০০-৫০০ টাকার বেশি ব্যয় করা যাবে না। এছাড়াও শহর এলাকায় অনেক পেশাদার প্রতিষ্ঠান আছে যারা অভ্যন্তরীণ বাগান বা ছাদ বাগান তৈরি করার প্যাকেজ বিক্রি করে ।
বাগানের রক্ষণাবেক্ষণ
বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু উদ্ভিদ সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে বিশেষ করে উদ্ভিদের রোগ সম্পর্কে । বাগান নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। নিয়মিত পানি দিন । নির্দিষ্ট কয়েকদিন পরপর মাটি পরিবর্তন করুন টবে আগাছা জন্মালে তা নির্মূল করুন। চারা ঘন হয়ে গেলে ঘন স্থান থেকে গাছ তুলে পাতলা করুন ।বাড়ির অভ্যন্তরে বাগান করার জন্য একজন কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে অথবা রয়েছে বাংলাদেশের কৃষি কল সেন্টার ১৬১২৩ । আবার যোগাযোগ করতে পারেন website (Agriculture Information Service)
উক্ত কৃষিবিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করুন। এবং গাছ সম্পর্কে খোলাখুলি আলোচনা করুন । প্রতিদিন আপনার বাগান পর্যবেক্ষণ করুন।
Leave a Reply