উদ্যোক্তা কি
উদ্যোক্তা হচ্ছে একজন ব্যক্তির নাম যিনি এমন কিছু পণ্য বা সেবার তৈরি করবেন যা আগে কখনো কেউ কখনো প্রদান বা তৈরি করেনি । একজন উদ্যোক্তার চিন্তাভাবনা পরিকল্পনা সাধারণ মানুষের থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে আরো কিছু বৈশিষ্ট্য উদ্যোক্তাদের মাঝে থাকে যা সাধারন মানুষের থেকে ভিন্ন । আজকে এই আর্টিকেল থেকে আমরা একজন উদ্যোক্তা কি এবং উদ্যোক্তা হতে কি কি জরুরী বিষয় জানতে হবে তা আলোচনা করব।
একজন উদ্যোক্তা হতে কি প্রয়োজন ?
একজন উদ্যোক্তা হতে সবচাইতে বেশি প্রয়োজন মনোবল এবং এর প্রতি মন স্থির করা। উদ্যোগ এবং আবেগের ওপর নির্ভর করে একজন মানুষের মনে উদ্যোক্তা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা জন্মে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য দুটি বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে মনোবল এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে পরিশ্রম করার সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা । উদ্যোক্তা হতে হলে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যত বাধাই আসুক না কেন সেই বাধা উপেক্ষা করে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রমকে মেনে নিতে হবে।
লক্ষ্য স্থির এবং কঠোর পরিশ্রম এর নিয়ত করা
উদ্যোক্ত হতে হলে আপনাকে প্রথমেই একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হতে হবে। মাথা ঠান্ডা রেখে অন্য কোন চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সকল বাধা উপেক্ষা করে পরিশ্রম করে যেতেই হবে। অনেক সময় মনে প্রশ্ন আসতে পারে
“আমি কি পারবো?”
“আমার দ্বারা কি সম্ভব?”
“আমি কনফার্ম লস করব”
“এত ধৈর্য ও পরিশ্রম কি আমি একাই করতে পারব!”
“তুমি পারবা না”
“এই ব্যবসা টিকবে না”
“লস হলে লোকে কি বলবে”
“তোমাকে দিয়ে কিছুই হবে না”
যদি আপনার মাথায় এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে তাহলে আমি আপনাকে বলব ধৈর্য ধরুন কারণ ধৈর্য আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
উদ্যোক্ত হওয়া নিয়ে স্টেপ জব এর একটি বিখ্যাত বাণী না বললেই নয় ” অন্যের ব্যক্ত ধারণা দিয়ে আপনার নিজের অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনাকে নিমজ্জিত করবেন না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অন্তর্দৃষ্টি অনুসরণ এবং সাহসের মানসিকতা থাকা” ।
ধৈর্য হলো ব্যবসার একটি মৌলিক নিয়ামক যেখানে লাভ বা লস ব্যবসারই অংশ।
ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা এবং কৌশলী হওয়া
যে কোন কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে সে কাজের প্রতি কিছু দক্ষতা প্রয়োজন এ সকল দক্ষতা নিজের মেধা এবং কৌশলের ওপর নির্ভর করে তৈরি হয়। যদি ভীত বা সংকোচ বোধ হয়ে কাজটি শুরু করেন তাহলে এতে কখনো সফল হতে পারবেন না। ব্যবসা করতে হলে প্রথমে ঝুঁকি গ্রহণ করার মন মানসিকতা নিয়ে শুরু করতে হবে । এখন বলতে পারেন কিভাবে ব্যবসায় ঝুঁকি নিব? ব্যবসা শুরুর আগে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে গবেষণা করতে থাকবেন পণ্যটির প্রতিদ্বন্দ্বী কারা রয়েছে এবং তারা কি ভাবে গ্রো করতেছে তা লক্ষ্য রাখুন যখন দেখবেন পণ্যটিতে লাভের পরিমাণ বেশি এবং ক্ষতির পরিমাণ কম তখন বুঝবেন এই পণ্যটিতে কোন প্রকার সংকোচ বোধ ছাড়াই ঝুঁকি নেওয়া যায় ।
পরামর্শ গ্রহণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধি
একজন উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে কারণ একটি ব্যবসা শুরু করার আগে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিন্তাধারা দিয়ে ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন না ব্যবসার বাধা বিপত্তি সম্পর্কে জানতে হবে তাই যত পারেন বই পড়বেন। অন্যরা কি বলছে এবং তারা কি পরামর্শ দিচ্ছে তা অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন। পরামর্শ দাতারা হয়তো আপনার চিন্তাধারনার কথাই বলবে , আপনার সাথে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবে এবং এর ক্ষতিকারক দিকগুলো বা সীমাবদ্ধতা গুলো সম্পর্কে অভিজ্ঞতা দিবে । ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে সোশ্যাল মিডিয়া ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকুন বিশেষ করে লিঙ্কড ইন প্ল্যাটফর্ম নিয়মিত ব্যবহার করা যায়। লিঙ্কড ইন প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম ।
আপনার লক্ষ্যকে মজবুত করুন
উদ্যোক্তা হতে হলে প্রতিদিন আপনার লক্ষ্যকে চর্চা করুন এটি নিয়ে বেশি বেশি চিন্তাভাবনা করুন এতে করে আপনার লক্ষ্য আরো বেশি মজবুত হবে । দৈনদিন কাজের ফাঁকে এটি নিয়ে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করতে পারেন। যত বেশি চিন্তাভাবনা করতে পারেন তত বেশি প্রশ্ন তৈরি হবে এতে করে পরবর্তী ধাপগুলোতে আগানো সহজ হবে
নিজেকে গুছানো
একজন উদ্যোক্তা হতে হলে উদ্যোক্তাদের মত নিজেকে গুছিয়ে পরিপাটি করতে হবে । দিনে পর্যন্ত ঘুমাতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের বেশি আসক্তি থাকলে তা পরিহার করবেন মনে রাখবেন আপনি আপনার মাথায় যা ঢুকাবেন ঠিক তাই ফিডব্যাক হিসেবে পাবেন।
অন্যকে সাহায্য করা
সব সময় নিজের পাশাপাশি অন্যদের ভালো চাইতে হবে তবেই আপনার ভালো হবে। অন্য একজন উদ্যোক্তাকে ভালো পরামর্শ দিলে এটি আপনাকে একজন ভালো উদ্যোক্তা হতে প্রভাবিত করবে। মনে রাখবেন আপনাকে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার পাশাপাশি একজন ভালো মানুষ হতে হবে।
যেকোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণে অটুট থাকা
এই আর্টিকেলটি যেহেতু বিগিনার উদ্যোক্তাদের জন্য তাই এখানে যেকোন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ব্যবসায় লস হলেও থেমে থাকা চলবে না। উদ্যোক্তার সবচেয়ে ভালো গুণ হলো বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতার সাথে যেকোন সমস্যার সমাধান করা।
শেষ কথা
সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত যারা নিতে পারে তারাই জীবনে সফল হতে পারে । একজন উদ্যোক্তাকে তার প্রতিটি সমস্যা বিচক্ষণতার সাথে সমাধান করতে হবে একটি পণ্যের দাম কখন বৃদ্ধি পাবে বা কখন কমবে সেটি জানতে হলে মার্কেট সম্পর্কে রিসার্চ করতে হবে এতে করে উদ্যোক্তার বিচক্ষণতার প্রমাণ মিলবে।
Leave a Reply